নিজেস্ব প্রতিবেদক: পার্বত্য চট্টগ্রাম মৎস্য চাষ উন্নয়ন (৩য় পর্যায়) সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ি জেলা শহরে নির্মাণাধীন মৎস্য হ্যাচারী বাস্তবায়ন কাজের শুরুতেই ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ করে হ্যাচারীর সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ক্ষেত্রেই অনিয়মের বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও বিহিত কোনো ব্যবস্থাই এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয় নি। মৎস্য হ্যাচারীতে কৃত্রিমভাবে মৎস্য রেনু ও পোনা উৎপাদন কার্যক্রম এবং মাছের ঘাটতি পূরনের লক্ষে হ্যাচারী বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও নিম্মমানের ঠিকাদারী কাজের ফলে মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানা যায়, ২০১২-২০১৭ অর্থ বছরে জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য পোনা উৎপাদন ও মাছের ঘাটতি পূরণে স্বনির্ভর এলাকায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম মৎস্য চাষ উন্নয়ন (৩য় পর্যায়) সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে মিনি হ্যাচারী নির্মাণে বরাদ্দ দেয় মন্ত্রনালয়। যার অনুকলে ১২টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্যাকেজে কাজ করার আদেশ পান। কিন্তু ঠিকাদাররা বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে নিজের ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘এম,কে,আর বি’ নামের একটি টিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই নির্মাণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ওপর জেলা মৎস্য বিভাগ এবং রাঙামাটিস্থ আঞ্চলিক কার্যালয়ের কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তাঁরা যাচ্ছেতাই ভাবে নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে। এমনকি জেলাশহরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির কোন প্রতিনিধিকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক, আব্দুর রহমান বলেন, কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে বলে আমি শুনেছি তবে ঠিকাদারদেরকে বলেছি কাজের গুনগতমান ভাল করার জন্য। মৎস্য বিভাগের প্রকৌশলী মোঃ ফারুক শেখ জানান, চলমান কাজগুলো নি¤œমানের হচ্ছে তা শুনেছি। ঠিকাদারদেরকে বলেছি আমাদের উপস্থিতি ছাড়া যেন ফাইলিং এর কাজ না করেন। সূত্র জানায়, কাজের স্থলে মৎস্য বিভাগের সঠিক তদারকি নেই, জেলার মৎস্য অফিসের কোন কর্মকর্তাকে তোয়াক্কা না নিজের ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে। মৎস্য চাষী আব্দুর রহিম জানান, মাছ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে যেমনি স্বাবলম্বী হওয়া যায় তেমনি বেকারত্বও দূর হয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার এ জেলার জন্য যে হ্যাচারী বাস্তবায়ন করছে কিন্তু ঠিকাদারদের কারণে এ থেকে সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল রউফ জানান, নির্মাণ কাজে ইট,বালু খোয়া, সিমেন্ট, ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে নিন্মমানের। এ বিষয়গুলো নিয়ে গত ২ মার্চ উপ-পরিচালককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য ও মৎস্য বিভাগের আহবায়ক শতরুপা চাকমা বলেন, কাজে ব্যাপক অনিয়ম করে যাচ্ছে ঠিকাদাররা। তাই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজেই মৎস্য বিভাগকে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।