ম্যানেজ প্রকল্পে অবৈধরা বৈধ
নিজস্ব প্রতিবেদক: খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার সিমান্তবর্তী বাইল্যাছড়ি এলাকায় চলছে রমরমা অবৈধ বালু ব্যবসা। প্রশাসনের সহায়তা ও উৎখোজের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ম্যানেজ করেই এ ১৪টি ঘাটে অবৈধ ব্যবসার কাজ চলে আসছে বলে জানান স্থানীয় এক ব্যবসায়ী।
তবে দাবীকৃত চাঁদা আর ম্যানেজ করার মর্ত যে ব্যবসায়ী মানবে না তার উপর চলতে থাকে একের এক হয়রানী, জরিমানা আর বার বার আটকের ঘটনা। মাটিরাঙ্গা উপজেলার বাইল্যাছড়ি ছাগলনাইয়াপাড়ায় বালু ইজারাদার সুবাস চাকমার কাজ থেকে নিজ প্রয়োজনীয় ইজারার টাকা পরিশোধ করে বালু ক্রয়কারী শফিকুর রহমান এ অভিযোগ করেন। এদিকে-স্থানীয় বেশ কয়েক কয়েকজন কৃষক অবৈধ ভাবে এ বালু উত্তোলনের ফলে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবী করেন।
এই বাইল্যাছড়িতে প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে আরো ১৩টি ঘাটে বালুর অবৈধ রমরমা ব্যবসা চলে আসলেও তা দেখেও দেখে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কারণ কারণ ম্যানেজ প্রকল্পে অবৈধরাই বৈধ বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ অবৈধ বালু ব্যবসায় প্রশাসন ছাড়াও গুইমারার টিভি সাংবাদিক নামধারী ও সংগঠনের নাম বিক্রয় করে কথিত এক হলুদ সাংবাদিককে দাপিয়ে বেড়ানো থামাতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করা হয় বলে তিনি জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘ কয়েক বছর আগে এই বাইল্যাছড়িতে কোন বালু ইজারার হতো না। তখন থেকে প্রায় ১৪টি ঘাটে প্রভাবশালীরা প্রশাসনসহ সকল সেক্টরকে ম্যানেজ করে বালু বিক্রয় করতো। তারই সূত্র ধরে আমার ছেলেও সবার সাথে আলাপ করে আমার জায়গার উপর বালু উত্তোলন করে তা বিক্রয় করতো।
হঠাৎ করে বালু উত্তোলনের দায়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন তাকে না পেয়ে আমার আরেক ছেলেকে নিয়ে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে দেয়। যার রশিদ নং বাংলাদেশ ফরম-১২১ (০০৩৮২০৯০)। এতে বালু মহাল নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হলেও বাইল্যাছড়িতে কোন বালু মহাল নেই বলে তিনি দাবী করেন।
পরে মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমার নিকট বাইল্যাছড়ি জরিমানা হওয়া জব্দকৃত বালু উন্মুক্ত নিলাম দেয়। ১৭ ফেব্রæয়ারী ২০১৬ তারিখে ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা হলেও তাতে ৯০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয় বলে জানান।
ঐ বালু সুবাস চাকমার নিকট থেকে টাকা পরিশোধ করে ক্রয় করে শফিকুর রহমান। শফিকুর রহমানের পিতার নামিয় নিজ জায়গায় তিনি বাড়ি করতে কিছু বালু রেখে দিলেও গত ০৮ জুন ২০১৭ তারিখে অবৈধ ভাবে পুণরায় ঐ বালু আবারো নিলামে দেওয়ার অভিযোগ করেন শফিকুর রহমান। নিলামে উক্ত বালু নিলামের দিন থেকে ১ সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে না নিলে তা দাবী করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়। এলাকাবাসীর কাজ থেকে জানতে চাওয়া হলে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বালুগুলো দীর্ঘদিন পূর্বের বলে স্বীকার করেন।
বিষয়টি নিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী ও গুইমারা উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমান বলেন, পুর্বের ইজারা দেওয়া বালু তো আর এত দিন পরে থাকে না। তাই এ অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনি খোঁজ খবর নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।