//নুরুল আলম// খাগড়াছড়ির গুইমারায় ‘রামসুবাজার জৈবসার উৎপাদনকারী সমিতি’ লটারীর নামে ৬২ লক্ষ টাকার রমরমা জুয়ার বাণিজ্য বসিয়েছে। গুইমারা রামসু বাজার জৈব সার উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি’র উদ্যোগে সপ্তাহ ধরে ১শত টাকা হারে নিয়ে চালানো হচ্ছে অবৈধ এ লটারী নামের রমরমা জুয়া। ভাগ্য পরিক্ষার নামে এ জুয়া পরিচালনা কমিটিতে রয়েছে এলাকার অংচিংনু মারমা (ম্যানেজার), মংশেপ্রু মারমা, বাবুরাম মারমা, মংসাউ মারমা, আচাইপ্রু মারমাসহ আরো অনেকে।
এ লটারীর নামে জুয়ার কোন ধরনের অনুমতি নেই জানিয়ে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, প্রশাসনের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়া লটারীর নামে এ জুয়া চলবে না। এ লটারীর কোন অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। এ বিষয়ে গুইমারা থানার ওসি’কে লটারী বন্ধে ব্যাবস্থা প্রহণে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিদ্যুৎ কুমার বড়–য়া বলেন, বিষয়টি জেনেছি। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ এ লটারী চলতে দেওয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্ময়ে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র জানায়, দুই হাজার পাঁচশত সদস্যের জন্য বিশ/পচিশ হাজার টাকার পুরস্কারের লোভনীয় প্রতারণা ও দুর্নীতির ফাঁদ পাতা হয়েছে এ অবৈধ লটারীতে। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহের ড্রর পূর্বে টাকা পরিশোধের শর্ত জুড়ে দেওয়াসহ পরিচালনা কমিটির যে কোন সিধান্ত চুড়ান্ত বলে গন্য হবে বলে কার্ডে উল্লেখ করা হয়। এ লটারী পরিচালনায় ২৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি রবিবার বিকেল ৩টায় রামসু বাজার জৈব সার উৎপাদনকারী ক্লাবে অনুষ্ঠিত হওয়া এ লটারীতে ৪টি স্কীনটাচ্ মোবাইল, ৪টি উন্নত মানের রাইস কুকার, ৪টি চায়না কম্বল, ৪টি ডিনার সেটসহ আরো কিছু লোভনীয় পুরস্কারের নাম প্রদর্শন করে লটারীর নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। যাতে সপ্তাহে আড়াই লক্ষ টাকা উত্তোলন করেও (আনুমানিক) ২/৩ হাজার টাকা দামের ৪টি মোবাইল পুরস্কার দেওয়া হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
এ সব উত্তোলিত অবৈধ লটারীর টাকায় কি করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার দাবী জানিয়ে সচেতন মহল। প্রতি সাপ্তাহে ১শ টাকা হারে আড়াই হাজার সদস্যর কাছ থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে আড়াই লক্ষ টাকা। আর মোট ২৫ সাপ্তাহে উত্তোলন করা হবে ৬২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। লটারীটি ২৫ সপ্তাহের মধ্যে ইতি মধ্যে ১ সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইতি পূর্বেও দেওয়ান পাড়া ক্লাবে এধরনের একটি লটারীর নামে জুয়া চালিয়ে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সূত্রে জানাযায়, এ টাকার একটি অংশ সন্ত্রাসীদের কাজে ব্যবহার হয়েছে।
অন্যদিকে লটারী পরিচালনা কমিটির ম্যানেজার অংচিংনু মারমার সাথে লটারীর বিষয়ে প্রশাসনের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসন সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দগণ এ লটারী’র বিষয়ে জানে।
সচেতন মহলের দাবী, রামসু বাজার জৈব সার উৎপাদন সমবায় সমিতির রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করা জরুরী, তাছাড়া এ সমিতির অজুয়াতে লটারী নামের জুয়ায় এলাকাবাসী বিভিন্ন আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
Leave a Reply