ট্রান্সফরমা মেরামতের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় ট্রান্সফরমা নষ্ট হওয়ার অযুহাতে মেরামতের নামে মোট অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গুইমারায় দায়িত্বরত লাইনম্যান মো: অহিদের বিরুদ্ধে। উপজেলার ডাক্তার টিলা, মেম্বারপাড়া,রেনুডেবা সহ বিশাল এলাকায় একটি ট্রান্সফরমান। গত ৪-৫ দিন ধরে এসব এলাকা কালো অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। পরিণত হয়েছে ভূতের বাড়ীতে।
অযুহাত এক’টায় দ্রুত বিদ্যুৎ লাইন চালু করতে বিকল হওয়া ট্রান্সফরমান মেরামত করতে হবে। দিনের পর দিন অন্ধকারে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গুইমারা বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ কবে আসবে জানতে চাইলে লাইনম্যানের অযুহাত ট্রান্সফরমা নষ্ট হয়েছে। সময় লাগবে,সাড়াতে রাঙ্গামাটি যেতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। শেষ মেষ কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিতে মেরামতের নামে হত দরিদ্র গ্রামবাসীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতে পেয়ে ঘন্টা কয়েক পড়েই জ্বলে উঠলে বিদ্যুৎ এর বাতি। টাকা পেয়ে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ঠিক হয়ে গেলে ট্রান্সফরমা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ অহিদ ইচ্ছে করেই গুইমারাবাসীকে দিনের পর দিন নানা অযুহাতে বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে রেখেছে। শুধু তাই নয় দীর্ঘ দিন ধরে গুইমারায় থাকার ফলে বিভিন্ন ভাবে আধিপত্য বিস্তার, অবৈধ সংযোগ প্রকাশ,মিটার প্রদানে ঘুষ গ্রহণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে লাইনম্যান অহিদের বিরুদ্ধে। একদিকে রমজানে বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট। অন্য দিকে গুইমারা উপজেলা লাইনম্যান অহিদের দাবিকৃত নির্ধারিত টাকা না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে নানামূখী সংকটে পড়েছে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
আবার বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার মেরামতের জন্য ১৫ হাজার টাকা স্থানীয় মেম্বার জনার্ধন সেন এর কাছ থেকে অহিদ টাকা দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, প্রতি গ্রাহকের কাজ থেকে ৩শত থেকে ৫শত টাকা উত্তোলন করে নিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ২৭ মে ২০১৭ থেকে গুইমারা উপজেলার ডাক্তার টিলা, মেম্বারপাড়া রেনুডেবা সহ বিশাল এলাকায় বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় অতি কষ্টের দিন যাপন করছে। বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হয়ে কয়েক হাজার লোক নানা সমস্যায় দিন কাটিয়েছে। বিশাল জন সংখ্যার বসবাস এই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় এলাকাবাসী, শাহ আলম, ফোরকানুল হক,মামুন,মিজানুর রহমান,অংলা মারমা অহিদের এ ধরনের ঘুষ ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যস্থরে বদলীর জোর দাবী জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ দিন একই জায়গায় কর্তব্যরত থাকায় অহিদের দূর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বহাল তবিয়তে থাকলে তার অনিয়ম দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলে অভিযোগকারীরা মন্তব্য করে।
অবৈধ ভাবে গ্রামবাসীর কাজ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়ে অহিদের সাথে যোগাযোগ করে ট্রান্সফমান মেরামতে নামে টাকা নেওয়াটি বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন টাকা আমি জোর করে নেয়নি এলাকাবাসী দ্রুত বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য টাকা দিলে ধুসের কি?
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গায় উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকোশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি থেকে ট্রান্সফরমা এনে পুনারায় স্থাপন করতে হবে। ট্রান্সফরমাটি আনতে বেশ কিছু টাকা খরচ হবে। টাকার যোগার করে ট্রান্সফরমাটি মেরামত করে আমরা পুনরায় সংযোগ দেওয়া হবে। গ্রামবাসীর কাজ থেকে টাকা নেওয়ার বৈধতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্রান্সফরমা মেরামতের টাকা সরকার বহন করবে। কোন গ্রাহকের কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়া জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
গ্রাহক থেকে বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমা মেরামতে অযুহাতে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলামকে জানানো হয়েছে। তিনি জানান কোন গ্রাহক কাছ থেকে টাকা নেওয়ার হলে লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।